সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জুয়েল বলেছেন, আমি ৪১ বছর সেনাবাহিনীতে চাকরির পর এখন পুরোপরি অবসরপ্রাপ্ত একজন মানুষ। চাকরির সুবাধে আপনাদের সাথে কথা বলার ইচ্ছা থাকলেও সম্ভব হয় নাই। আর আজকের এটা কোন রাজনৈতিক সমাবেশ না। এছাড়া আমি এখন পর্যন্ত রাজনীতি করি নাই এবং রাজনীতি শুরু করছি সেটা বলছি না । তবে ভবিষৎতে পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিবো এবং রাজনীতি করলে আপনাদের সময় মত জানাবো। মানুষের কল্যানে কাজ করতে গেলে রাজনীতি করতে হবে এমন কোন কথা নাই। রাজবাড়ীর অনেকে ভেবেছেন আমি হয়তো রাজনীতি করবো বা তাদের কর্মকান্ডে ভাগ বসাবো। তাদের জন্য বলবো আমি কারও বাড়া ভাতে ছাই দিতে আসি নাই।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে প্রান্তিক জনকল্যাণ সংস্থার আয়োজনে রাজবাড়ী পাংশার কসবামাজাইল আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সাবেক তিনি এসব কথা বলেন।
এস এম মতিউর রহমান জুয়েল বলেন, এই রাজবাড়ীর মানুষ হিসাবে ছোট সময় থেকে দেখে আসছি পাংশা সন্ত্রাসের জনপদ। এখানে খুন-খারাপি, অস্ত্রের ঝনঝনানি, বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী অপরাধমূলক কার্যক্রম করে বেড়াচ্ছে। একজনের নামের উপর ফোন আসলে আপনারা স্বর্ণালংকার, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে আপনারা টাকা দিচ্ছেন। কিন্তু কে ফোন করলো, তাকে আপনারা কেউ দেখেন নাই। এসব সন্ত্রাসীদের পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দিতে বিচরণ বেশি। যাদের ভয়ে আপনাদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। তারা চাঁদাবাজি করে এবং রাতে তারা যেসব বাড়ীতে থাকে ওইসব পরিবারের উঠতি বয়সী যুবতি মেয়েতের শীলতাহানি পর্যন্ত করছে। ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সন্ত্রাসীদের প্রতিহত না করলে সারাজীবন কষ্ট পাবেন। এই জেলার পাংশা, কালুখালী ও রাজবাড়ী সদরের ব্যাপক নদী ভাঙন থাকলেও মানুষের কোন প্রতিবাদ নাই। এই মানুষ গুলোর কথা ভেবে আমি এখন থেকে ঘন ঘন গ্রামে আসবো এবং রাজনীতি না করলেও আপনাদের নিয়ে সামাজিক অরাজকতা, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করতে চাই।
তিনি বলেন, আমি পুরোপুরি ভাবে একজন সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত মানুষ। হিন্দু মুসলামন বা অন্য ধর্মের মানুষ নিয়ে আমি কখনও ভেদাভেদ বা কাউকে ছোট করি না। আমার নামসহ ২২ জন সেনা কর্মকর্তার পাসপোর্ট বাতিল ও ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গত কয়েকদিন রাজবাড়ীর মানুষের খুব উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি আপনাদের পরিস্কার হওয়া দরকার। ওই খবরটা সঠিক, কিন্তু খবরটা যেভাবে প্রচার হয়েছে, সেটা ঠিক না। গত ১৫/১৬ বছর দেশ একটি দল শাসন করেছে। ওই সময়ে কিছু নিয়ম-অনিয়ম নিয়ে অন্তবর্তকালীন সরকার তদন্ত করছে। সেই তদন্তে আমাদের ২২ জনের সংশ্লিষ্ঠা নিয়েও তদন্ত হবে। এরমধ্যে কেউ স্বাক্ষী, কেউ অভিযুক্ত এরকম আছে। সুতরাং সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে এই কর্মকর্তাদের দেশে থাকা প্রয়োজন। যার কারণে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়, যা সারাবছরই চলে। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যাকে দেওয়া হয়, সে জানে আর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানে। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে রাজবাড়ীর মানুষের আগ্রহ বেশি। তবে যারা এই কাজটি করেছে তারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি দোষি হলে বিদেশ থেকে তো দেশে আসতাম না। আমি এই অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। জনমনে বিভ্রান্তি ও আমার সুনাম নষ্ট করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে রাজবাড়ী জেলার একটি মহল এই অপপ্রচার চালিয়েছে। যারা অপপ্রচার করছে তাদের মাথে মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ আছে। বাঁকী ৯৫ শতাংশ মানুষ আমাকে ভালবাসে এবং আমার সাথে আছে। ফলে অপপ্রচার চালিয়ে লাভ নাই। এখন থেকে আমি সবাইকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সব কিছু প্রতিহত করবো।
এর আগে দুপুরে সড়ক পথে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে আসেন। পরে সেখান থেকে মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসের একটি বহর তাকে নিয়ে কসবামাজাইলের সমাবেশে আসেন।
রা.র.খ