২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজবাড়ীতে রবি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিতরণকৃত পেঁয়াজ বীজ অংকুরোধগম (গজানো) সন্তোষজনক না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ ৩ হাজার ৭২৫ জন পেঁয়াজ চাষীর মাঝে পুনরায় বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার ২০০ জন ক্ষতিগ্রস্থ চাষীর মাঝে বীজ বিতরণের মাধ্যমে শুরু হয় পুনরায় পেঁয়াজ বীজ বিতরণ কার্যক্রম।
পর্যায়ক্রমে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজবাড়ী সদরে আরও ৬০০ জনসহ পাংশায় ৮৭৫, কালুখালী ৭০০ , বালিয়াকান্দিতে ১ হাজার ও গোয়ালন্দে ৩৫০ জন ক্ষতিগ্রস্থ চাষীর মাঝে পেঁয়াজ বীজ বিতরণ করা হবে।
জানাগেছে, আসন্ন মৌসুমে রাজবাড়ীতে হালি পেঁয়াজ আবাদের লক্ষে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলায় ৪ হাজার জন কৃষককে বীজতলা তৈরির জন্য ১ কোটি ৮ লাখ টাকা মূল্যে বিএডিসি’র সরবরাহকৃত (বারি-১, বারি-৪ ও তাহেরপুরি) এই ৩টি জাতের ৪ হাজার কেজি পেঁয়াজ বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। যার মধ্যে রাজবাড়ী জেলা সদরে ৮০০, গোয়ালন্দে ৪০০, পাংশায় ১০০০, বালিয়াকান্দিতে ১০০০ ও কালুখালী উপজেলায় ৮০০ সহ জেলায় মোট ৪ হাজার জন পেঁয়াজ চাষী এই বীজ পায়। বীজ বপনের পর দুই সপ্তাহের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও দুইটি (বারি-৪ ও তাহেরপুরি) জাত না গজানোয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ৭২৫ জন কৃষকের বীজতলা ক্ষতিগস্থ হয়। পরে গঠিত তদন্ত কমিটির বীজ না গজানোর সত্যতা পাওয়ায় বিএডিসি’র উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের মাঝে পুনরায় ১ কেজি করে লাল তীর জাতের পেঁয়াজ বীজ বিতরণ শুরু করে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এবছর রাজবাড়ী জেলায় প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এছাড়া এবছর জেলায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।
বিতরণ অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জনি খান।
এদিকে পুনরায় বীজ পাওয়া কৃষকদের দাবি, নতুন করে বীজতলা তৈরিতে তাদের আবারও খরচ হবে এবং আবাদও পিছিয়ে যাবে। যার কারণে এবার ফলনও আশানুরুপ হবে না। তবে জমি পতিত ফেলে না রেখে পুনরায় বীজতলা তৈরি করে আবাদ করবেন।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, বিএডিসির দেওয়া বীজ মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে দেখেছেন ৪ হাজার জনের মধ্যে ৩ হাজার ৭২৫ জনের সন্তোষজনক হারে গজায় নাই। এই ক্ষতিগ্রস্থ সকল কৃষককে প্রণোদনার আওতায় পুনরায় ১ কেজি করে বীজ দেওয়া হচ্ছে।আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বীজ পেয়ে যাবে। এই মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে কৃষকরা বীজ বপন করতে পারলে সঠিক সময়ে হালির চারা লাগাতে পারবে। ১০/১২ দিন আবাদ পেছালেও লক্ষমাত্রা ও উৎপাদন পুরন হবে।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে বীজ বপন করতে পারলে কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুশিয়ে উঠতে পারবে। আশা করছেন পেঁয়াজ আবাদের সমৃদ্ধ এই জেলায় লক্ষ্যমাত্রা এবং উৎপাদন দুটোই পুরন হবে। এ বিষয়ে কৃষকদের পাশে থাকবে জেলা প্রশাসন থাকবে।
রা.র.খ